ব্লগ বা ব্লগিং শব্দটি অনেকেই শুনে থাকবেন কিন্তু অনেকেই এটা জানে না যে একটা ব্লগ কিভাবে শুরু করতে হয় এবং ব্লগ থেকে কি কি করা যায়? একটি ব্লগ তৈরীর একাদিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্দেশ্য হচ্ছে আয় করা। ব্লগ থেকে কীভাবে আয় করা যায় তা আমরা পরবর্তীতে জানবো এবং তারপূর্বে জানবো কীভাবে শুরু করতে হয়। চলুন প্রথমে জেনে নেই ব্লগ কি? এবং ব্লগের উদ্দেশ্য কি কি?
কিভাবে ব্লগ শুরু করবেন
ব্লগ হল এক ধরনের অনলাইন জার্নাল বা তথ্যমূলক ওয়েবসাইট, যেখানে এক বা একাধিক লেখক নিয়মিত পোস্ট বা আর্টিকেল লিখে থাকেন। এই পোস্টগুলিতে লেখকরা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা, এবং তথ্য শেয়ার করেন, যা পাঠকরা পড়তে এবং মন্তব্য করতে পারে। বর্তমান সময়ে ব্লগিং একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে যা ব্যক্তিগত ব্লগ থেকে শুরু করে পেশাদারি ব্লগে বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে লেখা যায়। ব্লগের মাধ্যমে অনেকে তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখা শেয়ার করে থাকে এবং এর মাধ্যমে ইনকাম করে।
ব্লগের উদ্দেশ্য
ব্লগের প্রধান উদ্দেশ্য হলো জ্ঞান ও তথ্য শেয়ার করা, যা লেখকদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা, মতামত এবং পরামর্শ প্রকাশ করার একটি ডিজিটাল মাধ্যম। ব্লগে যেকোন লেখা চিন্তা চেতনা প্রকাশ করা যায় এবং পাঠকরা এটি পড়তে ও মন্তব্য করতে পারে। একটি ব্লগ তৈরীর জন্য ব্যক্তিগত বা প্রফেশনাল উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে তৈরী করা ব্লগ গুলোতে ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য, তার পোর্টফলিও, তার মতামত ও চিন্তা চেতনা সহ বিভিন্ন আর্টিকেল প্রকাশিত হয়ে থাকে। যেমন কোন অনলাইন প্রফেশনাল ব্যক্তি ফ্রীল্যান্সার, ইউটিউবার বা কোন খেলোয়ার বা কোন ব্যক্তি তার নিজে একটি ব্লগ তৈরী করে সেখানে তার সম্পর্কে শেয়ার করার পাশাপাশি পাঠকের জন্য কোন বার্তা বা তাদের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট বিষয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারে। সাধারনত এখানে প্রত্যক্ষভাবে কোন আয়ের উদ্দেশ্য থাকে না তবে পরোক্ষভাবে তার আয়ের ক্ষেত্রে বা প্রচারের ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
ব্লগের প্রফেশনাল বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যও রয়েছে। সাধারণত ব্লগ তৈরি করা হয়ে থাকে টাকা ইনকামের জন্য। যেকোনো বিষয়ে আপনি ব্লগ শুরু করতে পারেন যেমন আপনি ট্রাভেলিং নিয়ে লিখতে পারেন আপনি চিন্তা করুন যদি ট্রাভেলিং নিয়ে লিখতে শুরু করেন তাহলে আপনি লিখে শেষ করতে পারবেন না। অনুরূপভাবে আপনি বাগান নিয়ে লিখতে পারেন যে কিভাবে বাগান করতে হয় বাগানে কি কি গাছ লাগাতে হয় বা কখন লাগাতে হয় বা বাগানে কোন মাটির দরকার ইত্যাদি।
আপনি স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে লিখতে পারেন। আপনি জেনে অবাক হবেন যে এরকরম শত শত আইডিয়া আছে শুরু করার জন্য। আমরা অন্য পোস্টে নিশ নিয়ে আলোচনা করবো।
ব্লগ থেকে কি পরিমান আয় সম্ভব
ব্লগ থেকে কি পরিমান আয় করা সম্ভব এমন প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। আপনি জেনে অবাক হবেন যে ব্লগ থেকে মাসে ৪০ হাজার বা তার বেশি টাকা আয় করা সম্ভব। যদি আপনি পার্ট টাইম সময় দিয়ে ব্লগিং করেন, যেমন একজন, গৃহিনী, চাকুরিজীবি দৈনিক ২-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে মাসে ১০-২০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। এবং ফুল টাইম ব্লগিং করে মাসে ৪০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত সম্ভব।
ব্লগিং থেকে আয়ের ব্যাপারে অনেকেই মনে করেন শুধু বাংলা ভাষায় বা বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে ব্লগিং করতে হয়। বিষয়টা এমন নয়, ব্লগিং করার জন্য আপনি এমন একটি নিশ বাছাই করবেন যেন সেটা উন্নত দেশ টার্গেট করে এবং উন্নত দেশগুলো যেমন ইউরোপ আমেরিকার ভিজিটর পাওয়া যায়। আপনি চাইলে পোষা প্রাণী যেমন কুকুর, বিড়াল সম্পর্কেও লিখে আয় করতে পারবেন, তবে এই বিষয়ে আপনাকে ইংরেজিতে লিখতে হবে, কেননা পোষা প্রাণী সম্পর্কে বাংলা লিখে বা এশিয়ান অঞ্চলে ভিজিটর কম পাওয়া যাবে আর আয় ও কম হবে।
আয় সম্পর্কে অনেকেরই ভুল ধারণা থাকে কারন তারা ব্লগিং এর সঠিক বিষয় জানেনা, কিভাবে বেশি আয় করা যায় এই বিষয়ে তারা জানেনা। কিন্তু নিজের অজানার উপর ভিত্তি করে ভুল মন্তব্য করা ঠিক নয়। ব্লগ নিশ এবং আয়ের বিষয়ে আমরা আরো বিস্তারিত অন্য পোস্টে লিখবো। চলুন নেওয়া যাক ব্লগ শুরু করতে কি কি প্রয়োজন।
ব্লগ শুরু করতে যা প্রয়োজন
ব্লগ শুরু করার জন্য প্রাথমিক ৩ টি বিষয়ই যথেষ্ট।
এবং সেগুলো হলোঃ
- ডোমেইন
- হোস্টিং
- সিএমএস
এই ৩টির মাধ্যেমে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। এবং একটি ওয়েবসাইট তৈরীর পর সেখানে আপনার যে বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে সেই বিষয়ে লিখতে শুরু করতে পারেন অথবা আপনি যে বিষয়ে লিখে আয় করতে চান সেই বিষয়ে কন্টেন্ট লিখতে পারেন।
অনেকেরই একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে ওয়েবসাইট তৈরি করতে অনেক টাকার দরকার এবং অনেক অভিজ্ঞতার দরকার। আর এই ভুল ধারণা ই অনেক কে পিছিয়ে রাখে একটা ভালো সুযোগ থেকে। আপনি জেনে অবাক হবেন যে একটা ওয়েবসাইট বিনামূল্যে তৈরি করা যায় এবং সেখান থেকে আয় করা যায়। এর জন্য এক টাকা ও দরকার হয়না এমনকি শুরু করতে কয়েক মিনিট সময় লাগে।
কিভাবে বিনামূল্যে অর্থাৎ কোন টাকা খরচ ছাড়াই কিভাবে ব্লগ তৈরি করতে পারেন তার একাদিক উপায় এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেয়ার করবো অন্য পোস্টের মাধ্যমে। এই পোস্টে আমরা প্রফেশনাল উপায়ে ব্লগ শুরু করার বিষয়ে লিখছি তাই আমরা ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে শুরু করবো। যেখানে একটি ডোমেইন ৪০০ টাকা থেকে শুরু এবং একটি হোস্টিং ৫০০ টাকা থেকে শুরু। এই বিষয়ে আমরা নিম্নে বিস্তারিত জানবো।
নতুনদের অনেকেই আছেন যারা ডোমেইন, হোস্টিং, এবং সিএমএস সম্পর্কে না জেনেই ব্লগিং শুরু করে কিন্তু এটা আমরা সকলেই জানি কোন কাজ না জেনে শুরু করা উচিৎ নয়। আপনি জেনে অবাক হবেন যে এই বিষয়গুলো শিখার জন্য টাকা দিয়ে কোর্স কিনে তারপর অনেকেই শিখে। তবে এইসব আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শেয়ার করবো ইনশাল্লাহ।
চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডোমেইন
একটি ওয়েবসাইট অনলাইনে নিয়ে আসার জন্য তার একটি নাম বা ঠিকানা দরকার। এই নাম বা ঠিকানা হচ্ছে ডোমেইন। আপনার সকল লেখা, ছবি, আপডেট সব এই নাম বা ঠিকানায় গিয়ে আপনার অডিয়েন্স রা দেখতে পাবে।
যেমন আপনি আমার লেখা কন্টেন্ট পড়তেছেন আমার ওয়েবসাইটে, এখানে আমার ওয়েবসাইট বা ব্লগের নাম হচ্ছে rajibishere.com এবং এই নাম বা ঠিকানা ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোন প্রান্ত হতে যে কেউ ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবে। ডোমেইনের প্রথম অংশ হচ্ছে (rajibishere) নাম এবং দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ ডট (.) এর পরের অংশটুকু (com) হচ্ছে এক্সটেনশন। ডট কম (.com) হচ্ছে একটি টপ লেভেল ডোমেইন এক্সটেনশান।
ধরে নিচ্ছি আমরা একটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্লগ সাইট তৈরি করবো এবং তার জন্য একটি ডট কম এক্সটেনশানের ডোমেইন কিনবো। এখন ডোমেইনের নাম হতে হবে বিজনেস রিলেটেড, না হলেও চলবে কিন্তু বিজনেস বা নিশ রিলেটেড হলে ভালো হয়। যেমন আমরা একটা ট্রাভেল নিশ এর উপর ব্লগ সাইট তৈরি করবো এবং ডোমেইন কিনবো। তাহলে আমাদের খুজে দেখতে হবে আমাদের পছন্দের নাম ব্যবহার যোগ্য আছে কিনা। উদাহরণস্বরুপ একটা ডোমেইন নেইম যেমন, rajibstravelblog(.)com হতে পারে, এখানে আপনি ব্র্যান্ডেবল এবং সুন্দর যেকোন নাম বাছাই করতে পারেন যেটা এখনো কেউ কিনে নাই বা ব্যবহার যোগ্য আছে।
আমাদের ডোমেইন নেইম টি একটা হোস্টিং সার্ভারে কানেক্ট করতে হবে সেখানে সাইটের যাবতীয় লেখা, তথ্য, ছবি ইত্যাদি স্টোর করে রাখতে হবে।
হোস্টিং
আমাদের ডোমেইন নেইম rajibstravelblog(.)com কে যদি একটা বিল্ডিং কল্পনা করি তাহলে এটা স্থাপন করার জন্য জায়গার দরকার এবং সেটি হলো হোস্টিং। অর্থাৎ ডোমেইনের সকল লেখা, তথ্য, ছবি ইত্যাদি সেই হোস্টিং এ থাকবে এবং ভিজিটর তার মোবাইলে বা কম্পিউটার থেকে দেখতে পাবে। যেমন আমার ওয়েবসাইটের নাম হচ্ছে rajibishere.com এবং এটি হোস্ট করা আছে বা এর সকল লেখা, ছবি, তথ্য ইত্যাদি জমা আছে ক্লাউডফ্লেয়ার নামক হোস্টিং কোম্পানির কাছে। যখনি কেউ আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করে তখন সাইটের সকল তথ্য ক্লাউডফ্লেয়ার থেকে ভিজিটরের মোবাইলে প্রদর্শিত হয়।
হোস্টিং হচ্ছে মূলত একটি সার্ভার এবং এটি দেশি বিদেশী যেকোন কোম্পানি থেকে কিনা যেতে পারে, তবে হোস্টিং কেনার রেপুটেডেট কোম্পানি থেকে কিনতে হবে। একটি ওয়েবসাইটের প্রাথমিক প্রয়োজনে হোস্টিং এর দাম সাধারণত প্রতি বছরের জন্য সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা হয়ে থাকে।
সিএমএস
সিএমএস হচ্ছে কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যেখানে সকল কন্টেন্ট থাকে যেমন লেখা, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি ম্যানেজ করা হয় এবং ওয়েবসাইটের ডিজাইন, ফাংশনালিটি রাখা হয়। ইন্টারেন্টে অনেক CMS আছে যেগুলো ডেভেলপ করতে হয় টাকা খরচ করে এবং তাদের মধ্যে কিছু CMS আছে যেগুলো বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এমন অনেক সিএমএস আছে তবে তাদের মধ্যে বহুল জনপ্রিয় হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস। পুরো ইন্টারনেটের প্রায় ৪৭% তৈরি করা হয়েছে ফ্রী এবং ওপেন সোর্স ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। সাধারন ব্লগ সাইটগুলো ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। আপনি এখন আমাদের ওয়েবসাইট টি দেখছেন এটিও ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি।
ডোমেইন হোস্টিং এর সাথে কানেক্ট করে হোস্টিং স্পেস এ আমরা ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করতে পারি। একটি ওয়ার্ডপ্রেস ম্যানুয়াল এবং অটোমেটিক দুই ভাবেই ইন্সটল করা যায়। অটোম্যাটিক ইন্সটল করতে সময় লাগে ৩০ সেকেন্ড বা তার কম। ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল হয়ে গেলে সাইট তৈরি, এখন ডিজাইন পরিবর্তন করার দরকার হলে ওয়ার্ডপ্রেস রিপোসিটরিতে থাকা হাজার হাজার ফ্রী থিম রয়েছে সেখান থেকে যেকোন একটি থিম ইন্সটল করা যেতে পারে। এখন ব্লগে লেখা, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি যোগ করা যেতে পারে এবং তা পাঠকদের মাঝে শেয়ার করা যাবে।
ব্লগের জন্য প্রয়োজনীয় টুলস
একটি ব্লগ সাইটের জন্য কিছু টুল প্রয়োজন হতে পারে, তবে টুলস গুলো আবশ্যিক নয়। যেমন সাইটের এসইও এর জন্য একটা প্লাগিন দরকার যেটা ফ্রী তে ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন রিপোসিটরি থেকে পাওয়া যায়। ইয়োস্ট এসইও প্লাগিন একটি জনপ্রিয় অন পেজ অপ্টিমাইজেশন প্লাগিন। সাইটের এসইও ভালোভাবে অপ্টিমাইজ করে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল, বিং, ইহাহু, ডাকডাকগো, ইয়েপ ইত্যাদি থেকে ভিজিটর পাওয়া যায়। তবে আপনি যদি শুধু স্যোশাল মিডিয়া বা বিজ্ঞাপন থেকে ভিজিটর নিয়ে আসেন তাহলে এসইও খুব জরুরি নয়।
আপনার সাইটের ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন প্লাগিন প্রয়োজন হতে পারে আর প্রায় সবগুলোই বিনামূল্যে পাওয়া যায়। মূলত প্লাগিন সাইটের বিভিন্ন ফিচার যোগ বা এক্সটেন্ড করতে সাহায্য করে। ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস সকল জন্য একই রকম কিন্তু হাজার হাজার ওয়েবসাইট যাদের ভিন্ন ভিন্ন সার্ভিস বা প্রয়োজন আছে তা প্লাগিন ব্যবহার করে করা যায়।
ব্লগের জন্য মার্কেটিং
ব্লগের জন্য মার্কেটিং প্রয়োজন আছে কেননা আপনি একজন ভালো লেখক, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হতে পারেন তাহলে আপনার কন্টেন্ট মানুষের কাছে কিভাবে পৌছাবেন? এজন্য দরকার মার্কেটিং। ব্লগের জন্য পেইড এবং ফ্রী বা অর্গানিক মার্কেটিং করা যায়। যেহেতু ব্লগ তৈরি করা কোন ব্যক্তি দ্বারা বা সাধারণ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তাই পেইড মার্কেটিং খুব বেশি ব্যবহার হয়না কারন স্বল্প বাজেট ব্লগিং শুরু করেন এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি।
ব্লগের জন্য অর্গানিক মার্কেটিং করে বিনামূল্যে সার্চ ইঞ্জিন এবং স্যোসাল মিডিয়া থেকে ভিজিটর পাওয়া যায়। যেমন আপনি একটি কিওয়ার্ড বাছাই করেছেন যেটা প্রতি মাসে ১০ লক্ষ মানুষ গুগলে সার্চ করে তাহলে আপনি যদি গুগল সার্চে সেই কিওয়ার্ডে র্যাংকিং এ প্রথম থাকেন তাহলে আপনি সেই কিওয়ার্ডের উপর ভিত্তি করে আপনার সাইটে প্রায় ৭-৮ লক্ষ ভিজিটর পাবেন, যদি র্যাংকিং এ দ্বিতীয় থাকেন তাহলে ১ লক্ষ বা তার অধিক ভিজিটর পাবেন। এজন্য বানিজ্যিক ব্লগ তৈরির সময় নির্বাচিত নিশ যেমন টাভেল ব্লগ হতে পারে, সেই নিশের একটি কিওয়ার্ড নির্বাচন করার জন্য সার্চ ভলিউম ১০ হাজার থেকে ১ লাখ হওয়া দরকার। আপনি চাইলে ১০ মিলিয়ন সার্চ ভলিউম আছে এমন কিওয়ার্ড ও বাছাই করতে পারেন তবে জেনে রাখতে হবে সার্চ ভলিউম যত বেশি হবে কম্পিটিশন বা র্যাংক পাওয়াও তত কঠিন হবে। সার্চ ভলিউম বা কিওয়ার্ডের তথ্য বিনামূল্যে জানা যায়।
ব্লগ থেকে ইনকামের উপায়
একাদিক উপায়ে ব্লগ থেকে ইনকাম করা যায়। ইনকাম করার জন্য প্রথমে একটি ভালো ব্লগ তৈরি করতে হবে এবং ব্লগ জনপ্রিয় হলে সেখানে অনেক ভিজিটর থাকবে, আর এই ভিজিটর কে মনিটাইজ করা যাবে। অনেকেই মনিটাইজ করা নিয়ে চিন্তা করেন কিন্তু একটি ভালো ব্লগ তৈরি করা হচ্ছে প্রথম আর সেখান থেকে আয় করা খুবই সহজ।
ব্লগ থেকে আয়ের উপায়ঃ
- বিজ্ঞাপন
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- সাবসক্রিপশন
ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে আয় করার জন্য সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম হচ্ছে বিজ্ঞাপন। একটি ব্লগে কন্টেন্ট এর পাশাপাশি অনেক স্পেস বা জায়গা থাকে যেখানে আমরা বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারি। আপনার অনেকেই দেখে থাকবেন বিভিন্ন ব্লগ/নিউজ/ম্যাগাজিন সাইটে লেখা/ছবি/কন্টেন্ট এর সাথে বিজ্ঞাপন ও প্রদর্শিত হচ্ছে।
ব্লগ থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করা যায়। ই-কমার্স সাইট বা বিভিন্ন সার্ভিস সাইটে অসংখ্য পন্য বা সার্ভিস থাকে। সেই সকল সাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়ের অপশন থাকে এবং তারা একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রদান করে। এই লিংক ব্যবহার করে যদি কেউ পন্য বা সার্ভিস কিনে তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।
বিজ্ঞাপন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং সাবস্ক্রিপশন ছাড়াও প্রোডাক্ট সেল বা প্রিমিয়াম কন্টেন্ট থেকে আয় করতে পারেন। যেমন আপনি যদি একটি স্বাস্থ্য এবং ব্যায়াম নিয়ে ব্লগ তৈরি করেন তাহলে সেখানে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ব্যায়াম করার ইকুইপমেন্ট বিক্রি করতে পারেন। বা যেমন আপনি একটি শিক্ষা বিষয়ক ব্লগ তৈরি করেন তাহলে বিভিন্ন গাইড বা সমাধান বিক্রি করতে পারেন বা বিভিন্ন পরিক্ষা প্রস্তুতির প্যাকেজ প্রোগ্রাম বিক্রি করতে পারেন। বা যেমন আপনি একটি চাকরি বিষয়ক ব্লগ তৈরি করেন তাহলে চাকরির প্রস্তুতি মূলক কন্টেন্ট/গাইড বিক্রি করতে পারেন।
এই পোস্ট সম্পর্কে মতামত বা ব্লগিং সংক্রান্ত যেকোন প্রশ্ন কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।